ফ্রেশ গুড়া দুধের দাম কত | গুড়া দুধ তৈরির উপকরণ

গুড়া দুধে-গুঁড়ো দুধে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের মতো পুষ্টিকর উপাদান থাকে। এটি একটি ভালো ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি এর উৎস।

ফ্রেশ গুড়া দুধের দাম কত | গুড়া দুধ তৈরির উপকরণ

ফ্রেশ গুড়া দুধের দাম কত

বাংলাদেশে ফ্রেশ গুঁড়ো দুধের দাম বিভিন্ন কোম্পানির উপর নির্ভর করে। সাধারণত, প্রতি কেজি ফ্রেশ গুঁড়ো দুধের দাম ৪০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তবে, কিছু কোম্পানির ফ্রেশ গুঁড়ো দুধের দাম ৭০০ টাকা পর্যন্তও হতে পারে।
বাংলাদেশের কিছু জনপ্রিয় ফ্রেশ গুঁড়ো দুধের দাম নিম্নরূপ:
  • আল্ট্রা মিল্ক ফ্রেশ গুঁড়ো দুধ: প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা
  • ডেইরি ফ্রেশ ফ্রেশ গুঁড়ো দুধ: প্রতি কেজি ৫০০ টাকা
  • নন্দন ফ্রেশ গুঁড়ো দুধ: প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা
  • আলফা লাভা ফ্রেশ গুঁড়ো দুধ: প্রতি কেজি ৬০০ টাকা
  • নিলফামা ফ্রেশ গুঁড়ো দুধ: প্রতি কেজি ৭০০ টাকা

ফ্রেশ গুড়া দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা

ফ্রেশ গুঁড়ো দুধ হল এমন গুঁড়ো দুধ যা তরল দুধকে শুকিয়ে তৈরি করা হয়। এটি সাধারণত গরুর দুধ দিয়ে তৈরি করা হয়, তবে এটি ছাগলের দুধ বা অন্যান্য প্রাণীর দুধ দিয়েও তৈরি করা যেতে পারে। 
ফ্রেশ গুঁড়ো দুধের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
  • হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি: ফ্রেশ গুঁড়ো দুধে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি রয়েছে, যা হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • নিয়মিত কার্যকারিতা বজায় রাখা: ফ্রেশ গুঁড়ো দুধে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, যা শরীরের জন্য শক্তি সরবরাহ করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ফ্রেশ গুঁড়ো দুধে ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ফ্রেশ গুঁড়ো দুধের নির্দিষ্ট কিছু উপকারিতা নিম্নরূপ:
  • হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি: ফ্রেশ গুঁড়ো দুধে ক্যালসিয়াম রয়েছে, যা হাড়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি। ক্যালসিয়াম হাড়কে শক্তিশালী করে এবং হাড়ের ক্ষয়রোধে সহায়তা করে। ফ্রেশ গুঁড়ো দুধে ভিটামিন ডিও রয়েছে, যা ক্যালসিয়ামের শোষণকে উন্নত করতে সহায়তা করে।
  • নিয়মিত কার্যকারিতা বজায় রাখা: ফ্রেশ গুঁড়ো দুধে প্রোটিন রয়েছে, যা শরীরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি। প্রোটিন পেশী এবং টিস্যু তৈরি এবং মেরামত করতে সহায়তা করে। ফ্রেশ গুঁড়ো দুধে কার্বোহাইড্রেটও রয়েছে, যা শরীরের জন্য শক্তির প্রধান উৎস।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ফ্রেশ গুঁড়ো দুধে ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ভিটামিন সি এবং ই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে সহায়তা করে।
ফ্রেশ গুড়া দুধ হলো একটি জনপ্রিয় খাদ্য পণ্য যা সহজেই পাওয়া যায় এবং ব্যবহার করা যায়। তবে এই দুধের কিছু অপকারিতা রয়েছে যা জানা জরুরি।
ফ্রেশ গুড়া দুধের অপকারিতাগুলি হলো:
  • পুষ্টিগুণ হ্রাস: ফ্রেশ গুড়া দুধ তৈরির জন্য দুধকে শুকিয়ে গুঁড়ো করা হয়। এই প্রক্রিয়ার ফলে দুধের কিছু পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। বিশেষ করে, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি এবং প্রোটিন এর পরিমাণ কমে যায়।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি: ফ্রেশ দুধে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু ফ্রেশ গুড়া দুধ তৈরির সময় এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিও নষ্ট হয়ে যায়।
  • ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি: ফ্রেশ গুড়া দুধ তৈরির সময় যদি সঠিকভাবে পরিশোধন করা না হয়, তবে তাতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি থাকতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়াগুলির কারণে ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব এবং অন্যান্য অন্ত্রের সমস্যা হতে পারে।
  • অতিরিক্ত চিনি ও চর্বি: কিছু ফ্রেশ গুড়া দুধে অতিরিক্ত চিনি ও চর্বি যুক্ত করা হয়। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
ফ্রেশ গুড়া দুধ খাওয়ার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত:
  • ফ্রেশ গুড়া দুধ কেনার সময় প্যাকেটটি ভালভাবে পরীক্ষা করে নিন। প্যাকেটে কোনও ক্ষতি বা ফাটল থাকলে তা কিনবেন না।
  • ফ্রেশ গুড়া দুধ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন।
  • ফ্রেশ গুড়া দুধ ব্যবহার করার আগে তা ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। এতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে।

গুড়া দুধ তৈরির উপকরণ

গুড়া দুধ তৈরির জন্য শুধুমাত্র দুধই প্রয়োজন। তবে, কিছু ক্ষেত্রে গুঁড়া দুধের পুষ্টিগুণ বাড়ানোর জন্য অন্যান্য উপকরণও যুক্ত করা যেতে পারে। যেমন:
  • ভিটামিন এবং খনিজ: গুড়া দুধে ভিটামিন এবং খনিজ যুক্ত করে এর পুষ্টিগুণ বাড়ানো যেতে পারে। যেমন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ ইত্যাদি।
  • চর্বি: গুড়া দুধে চর্বি যুক্ত করে এর স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ বাড়ানো যেতে পারে। যেমন, দুধের চর্বি, তেল ইত্যাদি।
  • চিনি: গুড়া দুধে চিনি যুক্ত করে এর স্বাদ বাড়ানো যেতে পারে।
গুড়া দুধ তৈরির জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত উপকরণগুলি ব্যবহার করা হয়:
  • গরুর দুধ: গরুর দুধ দিয়ে তৈরি গুড়া দুধ সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
  • ছাগলের দুধ: ছাগলের দুধে গরুর দুধের চেয়ে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম বেশি থাকে। তাই ছাগলের দুধ দিয়ে তৈরি গুড়া দুধও বেশ জনপ্রিয়।
  • ভেড়ার দুধ: ভেড়ার দুধে গরুর দুধের চেয়ে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং ফ্যাট বেশি থাকে। তাই ভেড়ার দুধ দিয়ে তৈরি গুড়া দুধও বেশ জনপ্রিয়।
গুড়া দুধ তৈরির জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত পদ্ধতিটি অনুসরণ করা হয়:
  • প্রথমে দুধকে পাতলা করে নিন। এজন্য দুধের সাথে পানি মিশিয়ে নিন।
  • এরপর দুধকে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন।
  • ফুটন্ত দুধকে একটি স্প্রে ড্রায়ারে ঢেলে দিন।
  • স্প্রে ড্রায়ারে দুধকে শুকিয়ে নিন।
  • শুকনো দুধকে গুঁড়ো করে নিন।
গুড়া দুধ সংরক্ষণ:
গুড়া দুধকে একটি শুষ্ক এবং ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষণ করা উচিত। গুড়া দুধের প্যাকেটটি খোলার পর ভালোভাবে বন্ধ করে রাখুন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবহার করুন।
 গুড়া দুধ দিয়ে যে যে খাবার তৈরি করা হয়:
  • বিস্কুট, কুকিজ, কেক, ব্রেড, পেস্ট্রি ইত্যাদি বেকড পণ্য: গুঁড়া দুধ এই ধরনের পণ্যগুলিকে নরম, সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর করে তোলে।
  • স্যুপ, স্টু, ডেজার্ট, পানীয় ইত্যাদি: গুঁড়া দুধ এই ধরনের খাবারগুলিকে একটি সমৃদ্ধ এবং সুস্বাদু স্বাদ দেয়।
  • মাংস এবং সবজির খাবার: গুঁড়া দুধ এই ধরনের খাবারগুলিকে নরম এবং সুস্বাদু করে তোলে।
গুড়া দুধ ভালো থাকার সময়কাল:
 
গুঁড়া দুধের ভালো থাকার সময়কাল নির্ভর করে এর গুণমান এবং সংরক্ষণের উপর। সাধারণত, গুঁড়া দুধের ভালো থাকার সময়কাল হলো 18 মাস। তবে, ভালো মানের গুঁড়া দুধ 24 মাস পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে।
গুঁড়া দুধকে একটি শুষ্ক এবং ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষণ করা উচিত। গুঁড়া দুধের প্যাকেটটি খোলার পর ভালোভাবে বন্ধ করে রাখুন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবহার করুন।
উপসংহার-গুঁড়া দুধ একটি পুষ্টিকর এবং বহুমুখী উপাদান যা বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি একটি সহজ এবং সুবিধাজনক উপায় যাতে আপনার খাবারে পুষ্টি যোগ করা যায়।